দেখতে দেখতে আবার একটা পুজো এসে গেল। যদিও এবারের পুজোকে ঠিক কতটা পুজো বলা যায় সে নিয়ে সন্দেহ আছে। পুজোর আনন্দ, জৌলুশ সবই এবার অস্তমিত প্রায়। করোনাসুরের দাপট থেকে বাঁচাতে এই ধরাধামে এখনো কোনো অসীম শক্তির আবির্ভাব ঘটেনি। তবু পুজো আসছে পুজোর নিয়মে অথবা কিছুটা অনিয়মেই। মহালয়া আর বিশ্বকর্মা পুজো পড়েছে একই দিনে। আবার মহালয়ার দীর্ঘ এক মাস পরে দেবী দুর্গার আগমন ঘটছে মর্ত্যে। ফলে সব মিলিয়ে শুভ-অশুভ, মঙ্গল-অমঙ্গলের খেলায় দ্বিধাগ্রস্ত মানবসমাজ আরো বেশি দ্বিধায় পড়েছে। বহু মানুষ কর্মহীন গত ৬ মাস যাবৎ। সরকারী-বেসরকারী, সংগঠিত-অসংগঠিত সব ক্ষেত্রেই মানুষ কম-বেশি কাজ হারিয়েছে। পুজোর সিজনকে মাথায় রেখে যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সারাটা বছর অপেক্ষায় থাকে তারাও ভীষণ রকম বিপদে। সংগঠিতভাবে অনেকেই এগিয়ে আসছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পত্রিকা তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে ফান্ড জোগাড় হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারও কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসেছে পুজোর সময় কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তবে সামগ্রিক প্রয়োজনের তুলনায় তা কতটা পূরণ করতে পারবে অভাব সেটাই এক বিরাট সংশয়।
কিন্তু আমাদের অস্ত্র বলি বা উপায় সে তো ওই কলমই। তাই এই শব্দ, ছবি, ভাষাগত কারুকাজ এসবের উপর ভর করেই আমরা এগিয়ে যেতে চাইছি প্রাক-পূজা সংখ্যার দিকে। পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রথমবার " দক্ষিণের জানালা " আত্মপ্রকাশ করছে পিডিএফ সংখ্যা রূপে। দাম রাখা হয়েছে নূন্যতম ১০ টাকা। চাইলে কেউ বেশীও দিতে পারেন। কারণ আপনাদের থেকে পাওয়া অর্থ আমরা ব্যয় করব এই লকডাউনের সময়ে কাজ হারানো ও দুর্দশায় থাকা কিছু পরিবারের মধ্যে। এই পরীক্ষামূলক সাফল্যের উপর নির্ভর করেই আমরা আনতে চলেছি এবারের পূজাসংখ্যা। সেক্ষেত্রে পূজাসংখ্যাটি ওয়েব এ আসবে নাকি পিডিএফ আকারে তা নির্ধারণ করতে আমাদের খানিক সুবিধা হবে। পূজাসংখ্যা প্রকাশ পাবে অক্টোবরে। তার আগে এই সাধারণ সংখ্যাটিকে আমরা প্রাক-পূজা বা পূজা-প্রস্তুতি সংখ্যা হিসেবে রাখলাম। আপনাদের উৎসাহ ও আস্কারা পেলে আগামীতে আরো ভালো কাজ উপহার দিতে পারব এই আশা রাখি। তার আগে আপনারা এই সংখ্যাটি পড়ে দেখুন আর জানান " দক্ষিণের জানালা " র বিভিন্ন সংখ্যা নিয়ে আপনাদের মতামত। আলোচনা আর সমালোচনা দুটোই আমরা কান পেতে শুনব, যেভাবে এতদিন শুনে এসেছি। আপাতত অতিমারী কাটিয়ে নতুন দিনের জন্য অপেক্ষা। সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।